রংপুরের ব্যবসায়ী আশরাফুল হককে হত্যা এবং লাশ খন্ড-বিখন্ড করে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানের পাশে দুটি ড্রামে ফেলে রাখার মামলায় প্রধান আসামি জরেজের প্রেমিকা শামীমাকে আলামতসহ গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-৩।
জানা গেছে, পরকীয়ার জেরে হত্যার পর আশরাফুলের লাশ কেটে ২৬ টুকরা হয়।

অপরদিকে এ ঘটনার মূলহোতা জরেজুল ইসলামকে কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় জাতীয় ঈদগাহ মাঠের গেটের কাছে নীল রঙের দুটি ড্রামে আশরাফুলের খণ্ড খণ্ড মরদেহ পাওয়া যায়। তাৎক্ষণিক পরিচয় শনাক্ত না হলেও পরে আঙুলের ছাপ নিয়ে আশরাফুলের পরিচয় নিশ্চিত হয় পুলিশ।
আশরাফুল হক (৪২) রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তার ১০ বছরের এক মেয়ে ও সাত বছরের এক ছেলে রয়েছে। তার বাবার নাম মো. আবদুর রশীদ।

শুক্রবার সকালে পরিবারের সদস্যরা আশরাফুলের মরদেহ নিতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) মর্গে যান। সেখানে বোন আনজিরা বেগম কান্নায় ভেঙে পড়েন।

আনজিরা বিলাপ করে বলেন, আশরাফুল কাঁচামালের ব্যবসা করতেন। তিনি ট্রাকে কাঁচামাল নিয়ে ঢাকার বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করতেন। গত মঙ্গলবার আশরাফুল তার বাবাকে হাসপাতালে রেখে মালয়েশিয়াফেরত বন্ধু জরেজ মিয়াকে সঙ্গে নিয়ে ঢাকায় রওনা হয়েছিলেন।

ওই দিনই আশরাফুলের সঙ্গে শেষ কথা হয়েছিল তা বোনের। তখন আশরাফুল বলেছিলেন যে তিনি নারায়ণগঞ্জে আছেন। তার সঙ্গে জরেজও রয়েছেন। তারা এক পাওনাদারের কাছে টাকা নিতে অপেক্ষা করছেন।
আনজিরা বলেন, ‘আশরাফুল বলেছিল, “বাবাকে হাসপাতালে রিলিজ দিবে, টাকাপয়সা দিছি। বাবাক নিয়া আইসো।’ এরপর থাকি আশরাফুলকে কল দিলে তার বন্ধু জরেজ ধরে। আর বলে, ‘আশরাফুল ব্যস্ত আছে, কালেকশনে গেছে।’
স্বজনেরা জানান, আশরাফুলের স্ত্রী লাকী বেগম গত বুধবার স্বামীর মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেন। তখনো ফোন ধরেছিলেন জরেজ মিয়া। বলেছিলেন, আশরাফুল ‘কাজে ব্যস্ত’।